1. admin@daniksomoyerpotrika.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
জিসাস নেতৃবৃন্দের জরুরী যে নির্দেশনা দিয়েছেন সভাপতি ইভা পঞ্চগড়ে শিশু-কিশোর উৎসব বিতর্কিত দুজনকে কেন উপদেষ্টা বানানো হলো জয়নুল আবেদীন ফারুক গণ প্রকৌশল দিবস পালন করেছে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের সংগঠন আইডিইবি’র আলোচনা সভা ১৫ বছর পরে বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখলো সায়েক এম রহমান পঞ্চগড়ে বাংলাদেশ জাসদ এর জেলা কার্যালয়ে মত বিনিময় সভা পঞ্চগড়ে সাবেক রেলমন্ত্রীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা পঞ্চগড়ে ছাত্রদলের প্রতিবাদ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী পালন জিয়া পরিষদের সভায় সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার রাজনৈতিক বক্তব্য পঞ্চগড়ে ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আওয়ামীলীগ নেত্রী আকতারুন নাহার সাকীর বিরুদ্ধে

অনিয়মে পঞ্চগড় ডায়াবেটিক সমিতি ও মকবুলার রহমান জেনারেল হাসপাতাল ডুবতে বসেছে

  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ৯৮ বার পঠিত

পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি 

অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতায় প্রায় বন্ধ হতে চলেছে পঞ্চগড় ডায়াবেটিক সমিতি ও জেনারেল হাসপাতাল। বিশাল অবকাঠামো ও আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি থাকা সত্বেও কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনিয়ম ও পরিচালনা কমিটির উদাসীনতার কারণে উদ্বোধনের এক বছরের মধ্যে ইতোমধ্যে জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।

সমিতির সদস্য ও স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন কর্মকর্তা কর্মচারীদের সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে নির্বাহী কমিটি। তাদের উদাসীনতা ও স্বজনপ্রীয়তার কারণে এই অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে বন্ধ হয়ে যাবে জেলার গুরুত্বপুর্ণ একটি চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে গেলে চিকিৎসাবঞ্চিত হয়ে পড়বে হাজার হাজার অসুস্থ মানুষ। এই হাসপাতালের নিবন্ধিত ১৩ হাজার  ডায়াবেটিক রোগীও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন।

১৯৯৩ সালে পঞ্চগড় শহরের অদূরে মিঠাপুকুর এলাকায় ১ একর ৬২ শতক জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় পঞ্চগড় ডায়াবেটিক সমিতি। সেই সময় জেলার কয়েক হাজার  আখচাষি এবং ব্যবসায়ি সহ সমাজের নানা স্তরের মানুষের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। পরবর্তিতে সরকারী অনুদানে নির্মিত ৪ তলা ভবন ২০১৩ সালে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসপাতালটি পরিচালনার জন্য সরকারি উদ্যোগে অফিস এবং চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য ডাত্তার কক্ষ, নার্সদের কক্ষ সহ রোগীদের জন্য উন্নত মানের বিছানা প্রদান করা হয়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে ৩৫ সদস্যের একটি নির্বাহী কমিটি দ্বারা এই হাসপাতাল পরিচালিত হলেও ২০২০ সালে জেলা প্রশাসককে বাদ দিয়ে কমিটির সভাপতি হন পঞ্চগড় ১ আসনের সংসদ সদস্য মজাহারুল হক প্রধান। তবে এই কমিটি অনুমোদন দেয়নি সমাজসেবা অধিদপ্তর। ২০১৮—১৯ সালে সরকারী অনুদানে ৭ কোটি টাকা মুল্যের আধুনিক চিকিৎসা যন্ত্রপাতি কেনা হয়। ব্যবহারের অভাবে অধিকাংশ যন্ত্রপাতি নষ্ট হতে চলেছে।

এই প্রতিষ্ঠানের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এস এম সাদেকুজ্জামান অনেক যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। অনেক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচেছ। কিছু ব্যবহার হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার রাকিবুজ্জামান সোহেল জানান কোন চেইন অফ কমান্ড নাই।

হাসপাতালের কেনা কাটা ও হিসাব নিকাশেও অসচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। ওষুধ বিক্রয় কেন্দ্র সহ অন্যান্য লাভজনক খাত থেকে লাভ্যাংশ ডায়াবেটিক সমিতির হিসাবে জমা হয়না। ওষুধ বিক্রয় কেন্দ্রটি ডায়াবেটিক সমিতি দ্বারা পরিচালিত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি ব্যাক্তিগত ভাবে পরিচালনা করছেন হাসপাতালের হেলথ এডুকেটর রাহাত পারভেজ অপু। এমপির লোক বলে পরিচিত এই অপু এবং হিসাব রক্ষক সোহেল রানা তালুকদার সহ কয়েকজনের একটি সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে এই হাসপাতাল। এছাড়া হাসপাতালের অন্যান্য কর্মচারীরাও নিয়ম বহির্ভুত ভাবে চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট অন্য ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে এই হাসপাতালে রোগীরা চিকিৎসার জন্য আসতে চাইলেও অসাধু কর্মচারীদের উৎসাহে অন্য ক্লিনিক বা ডায়াগষ্টিকে চলে যাচ্ছেন তারা। আয়ের চেয়ে ব্যায় বেশি হওয়ার কারণে ৮ মাসের বেতনও পাচ্ছেন না কর্মচারী কর্মকর্তারা।

পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগও রয়েছে। নির্বাহী কমিটির যুগ্ন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম সারোয়ার হোসেন জানান, অনেক অনিয়ম আছে। অপুর হেলথ এডুকেটর পদে চাকুরী করার  সার্টিফিকেট নাই কিন্তু চাকুরী করছে। হিসাব নিকাশেও সমস্যা আছে। দুই তিনজন সবকিছু নষ্ট করছে।

এই প্রতিষ্ঠানের আজীবন সদস্য বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় জেলার সভাপতি  আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের জানান, একটা সিন্ডিকেটের হাতেই যেন সবকিছু। কোন জবাবদিহিতা নেই। নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক আবু সালেক জানান, অনেক সম্ভাবনাময় এই হাসপাতাল। কিন্তু স্বেচ্ছাচারিতার জন্য বন্ধ হয়ে যাবে অচিরেই। এখানে আয়ের চেয়ে ব্যায় দেখানো হয় বেশি। সমিতির অর্থ লুটপাট হয়। এই প্রতিষ্ঠানের অনেক সম্পদ রয়েছে। এগুলো পরিকল্পিতভাবে ব্যবহৃত হলে হাজার হাজার মানুষের উপকার হতো। চিকিৎসার জন্য রংপুর দিনাজপুর যেতে হতোনা। এই প্রতিষ্ঠানে ৪ জন নিয়মিত ও ২ জন গেষ্ট ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কামাল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, অনেক চেষ্টা করছি। কিন্তু পারা যাচ্ছেনা।

পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক তৌহিদুল বারি বাবু  জানান এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে এই হাসপাতাল।

তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হেলথ এডুকেটর রাহাত পারভেজ ও একাউন্টেন্ট সোহেল রানা তালুকদার।  তারা বলছেন সকল অভিযোগ মিথ্যা। রাহাত পারভেজ জানান শুধু মাত্র প্যান্ট শার্ট পড়ে বেড়াতে পারবো বলে এই প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করি। না হলে করতাম না।

হিসাব রক্ষক সোহেল রানা তালুকদার জানান, কমিটি নির্দেশনাতেই কাজ করি। আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো মিথ্যা।

সকল অভিযোগ অস্বীকার করে সাধারন সম্পাদক মখলেছুর রহমান মিন্টু জানান, এই হাসপাতালে কোন দুর্নীতি নাই। একটি অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এই সাইটের কোনো লেখা, প্রচ্ছদ, ছবি, ভিডিও, কপিরাইট করা সম্পূর্ণ বেআইনি। © স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০১৮ দৈনিক সময়ের পত্রিকা।
Theme Customized By Arman IT