পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে আগামী ফেব্রুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহে তিনদিন ব্যাপী আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সালানা জলসাটি বন্ধের দাবীতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে সম্মিলিত খতমে নবুয়ত সংরক্ষণ পরিষদ নামে একটি ইসলামী সংগঠন।
রোববার (২৮ জানুয়ারী) দুপুরে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলামের হাতে স্মারকলিপি প্রদান করেন সংগঠনটির নেতারা। এসময় স্মারকলিপিটি গ্রহণ করে দ্রুতই তার অফিস কক্ষে চলে যান জেলা প্রশাসক।
স্মারকলিপি নিয়ে যান সম্মিলিত খতমে নবুয়তের উপদেষ্টা মাহমুদুল আলম, সভাপতি আব্দুল হান্নান, সম্মিলিত খতমে নবুয়ত ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ক্বারী মো আব্দুল্লাহ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার সভাপতি আব্দুল হাই, ইসলামবাগ মসজিদের ইমাম আমিরুজ্জামানসহ সংগঠটির নেতাকর্মীরা।
সংগঠনটির নেতারা জানান, পঞ্চগড়ের আহমদনগর এলাকায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন আগামী ২৩-২৫শে ফেব্রুয়ারী তিনদিন ব্যাপী সালানা জলসার আয়োজন করতে যাচ্ছে। এই জলসার মাধ্যেমে তারা ইসলামের নামে কুফুরী মতবাদ প্রচার করে আসছে। তাদের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। অবিলম্বে তাদের এই জলসা বন্ধ না করা হলে যে কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে এর দায় প্রশাসন ও আহমদিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিতে হবে।
সম্মিলিত খতমে নবুয়ত সংরক্ষণ পরিষদ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ক্বারী মো আব্দুল্লাহ বলেন, কাদিয়ানীরা কুফুরী মতবাদ প্রচার করে। তাই তাদের দ্রুতই কাফের ঘোষনা করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ করছি আমরা। আগামী ২৩-২৫শে ফেব্রুয়ারী তিনদিন ব্যাপী সালানা জলসার আয়োজন করতে যাচ্ছে তারা। আমরা জলসা বন্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। জেলার অভিভাবক হিসেবে এসময় আমাদের কিছু দাবী তাঁর কাছে জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি স্মারকলিপিটি গ্রহণ করে দ্রুতই তার কক্ষে চলে যান। এ কারণে তার সাথে কোন কথা বলতে পারিনি আমরা। যদি প্রশাসন আমাদের কথা না রাখে তাহলে অপ্রীতিকর কিছু হলে এর দায় প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম।
জানা গেছে, আগামী ২৩-২৫ মার্চ তিনদিনব্যাপী আহমদিয়াদের ৯৯তম বার্ষিক সালানা জালসা পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের আহমদনগর গ্রামে অনুষ্ঠিত বলে দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে আহমদিয়াদের পক্ষ থেকে জালসার বিষয়ে অবগতি ও সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর আহমদিয়া সম্প্রদায়ের সালানা জলসা বন্ধের দাবীতে ৬টি ইসলামী সংগঠন আন্দোলনে নামে। ৩ মার্চ আন্দোলন শুরু হয়ে চলে টানা তিনদিন। এসময় পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির সাথে তাদের সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়। এছাড়া আহমদিয়াদের বাড়ি ঘরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।