স্টাফ রিপোর্টার : ইকবাল বাহার
মনোয়ারা বেগম এবং তার কন্যাসন্তানকে সাড়ে ৬ শতক জমি দিয়েছিলেন স্বামী লুৎফর রহমান। সেই জমিতেই বাড়ি করে স্বামী-সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন মনোয়ারা বেগম। এরপর একদিন হঠাৎ করেই তাকে তালাক দিয়ে বসে তার স্বামী, বের করে দেয় নিজের এবং সন্তানের নামে রেজিষ্ট্রিকৃত জমির বাড়ি থেকে। গত ৮ বছর ধরে বাড়ি ছাড়া হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবার দাবি তাঁর।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সময় টিভির পঞ্চগড় অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তোলেন তিনি। মনোয়ারা বেগম পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার বাজারপাড়া এলাকার আলহাজ্ব লুৎফর রহমানের স্ত্রী ছিলেন।
মনোয়ারা বেগমের অভিযোগ, তার স্বামীর আগের সংসারের সন্তানেরা তাকে অধিকার বঞ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় দলীয় প্রভাব দেখিয়ে মারধর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় লুৎফর রহমানের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা আ.স.ম নুরুজ্জামান, নুর নেওয়াজ ও নুর কুতুব।
মনোয়ারা বেগম বলেন, ২০০৩ সালে আলহাজ্ব লুৎফর রহমানের সঙ্গে আমার ইসলামী রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়। আমাদের দাম্পত্যে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আমাদের দাম্পত্য চলাকালে আমার স্বামী ২০১৩ সালে রেজিস্ট্রিকৃত দলিল মূলে আমার নামে ২ শতক ও আমার মেয়ে মোছা. জান্নাতুন লোবার নামে সাড়ে ৪ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে দেন। এই জমিতে আমি বসতবাড়ি এবং দোকান ঘর নির্মাণ করেছি। জায়গাটা বাজারের ওপর হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে আমার স্বামীর আগের সংসারের সন্তানেরা। প্রত্যেকই আওয়ামী লীগের পদধারী প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় আমার স্বামীকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে ও চাপ প্রয়োগ করে ২০১৬ সালে আমার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে বাধ্য করে। এরপর সকলে মিলে আমার ও আমার মেয়ের নামে রেজিস্ট্রি দেওয়া দলিলের সম্পত্তি জবর দখল করার জন্য আমাকে আমার বসত বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। আমি দীর্ঘ ৮ বছর ধরে অধিকার বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি আমার নামে রেজিষ্ট্রি হওয়া সম্পত্তি ফিরে পেতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মনোয়ারা বেগমের আগের সংসারের মেয়ে তাজনিম কনা। তিনি বলেন, শুধুমাত্র ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে আমার মায়ের সঙ্গে এতদিন ধরে অন্যায় করে আসছে লুৎফর রহমান এবং তার সন্তানেরা। তারা আমার সঙ্গেই অন্যায় করেছে। আমার মা’কে যখন বিয়ে করে তখন আমি অনেক ছোট ছিলাম। তখন এ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে আমাকে নিজের সন্তান হিসেবে গ্রহণ করে লুৎফর রহমান। তার পরিচয়েই আমি বড় হয়েছি, আমার সব ডকুমেন্টে যেমন ভোটার আইডি, জন্ম সনদ, সার্টিফিকেটে বাবার নামের জায়গায় তাঁর না। কিন্তু ২০১৬ সালের পর থেকে সব অস্বীকার করছেন।
এ বিষয়ে আলহাজ্ব লুৎফর রহমানের ছেলে নুর নেওয়াজ বলেন, ওই জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের মাধ্যমে যদি জমিটি তাঁরা পায়, আমাদের আপত্তি নেই।