1. admin@daniksomoyerpotrika.com : admin :
মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নানা আয়োজনে সংবর্ধিত করলেন অবরুদ্ধ বাংলাদেশের লেখক যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা সায়েক এম রহমানকে একাত্তর আমরা ভুলতে পারিনা : মির্জা ফখরুল পঞ্চগড়ে অবৈধ বালুসহ নৌকা জব্দ করলেন এসিল্যান্ড মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পঞ্চগড়ে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ”স্বপ্নছোঁয়া” এর শ্রদ্ধা পঞ্চগড়ে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ বাংলাদেশী তরুনিকে নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় মিথ্যাচার, নিন্দা জানালেন মা-বাবা পঞ্চগড়ে বিজিবির অভিযানে ৮০০ কেজি ভারতীয় আলু জব্দ পঞ্চগড়ে সারজিসের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র পেল ২ হাজার শীতার্ত নজরুল ইসলাম মোল্লা সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের এক অবিচ্ছেদ্য নেতৃত্বের উদাহরণ: এইচ এম রাজু আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসে দুর্নীতিগ্রস্ত সংস্থার ম্যানেজার পঞ্চগড়ের শ্রেষ্ঠ জয়িতা

‘খাওয়া-পড়া-কাপড়’র জন্য লড়াই করছিনা, বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সহযোগিতা চাই’

  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৯৪ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার : ইকবাল বাহার 

অনুগ্রহ করে আমাকে একটু এগিয়ে দিন, বেঁচে থাকার লড়াইয়ে আমি যাতে এগিয়ে যেতে পারি। আমি খাওয়া–পড়া–কাপড়, সম্পদ এসবের জন্য লড়াই করছি না শুধুমাত্র বেঁচে থাকার লড়াইয়ে আপনাদের সহযোগিতা, সহমর্মিতা ও দোয়া কামনা করছি। এটা থেকে আমায় বঞ্চিত করবেন না ।

আমিও আপনাদের সাথেই বাঁচতে চাই, পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখতে চাই। মানুষের জন্য মানুষের হয়ে কাজ করতে চাই। আমি একটু নিয়মিত চিকিৎসা ও মেডিসিন পেলেই সম্পুর্ণ সুস্থ হয়ে বাঁচতে পারবো।

এক ফেসবুক পোস্টে এভাবেই বেঁচে থাকার আকুতি জানিয়েছেন জাহিদ হাসান (২৭) নামের এক যুবক। নিজের দুইটি কিডনিই বিকল হবার পর মায়ের দেয়া কিডনিতে গত দুই বছর ধরে বেঁচে আছেন তিনি। বর্তমান মায়ের দেয়া কিডনিতে ফিরে পাওয়া জীবন নিয়েও শঙ্কিত এ তরুন। ফলে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে পাশে চান বিত্তবানদের।

জাহিদ হাসানের জীবন জুড়েই যেন প্রতিকূলতা। জীবন যুদ্ধে বারবার হোচট খেতে হচ্ছে তাকে। মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেও শেষ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি। স্বপ্ন ছিলো- চাকরি করবেন। পরিবারের সহায় হবেন। দূর হবে দুঃখ। কিন্তু ভাগ্য যেন তার সহায় হচ্ছেনা।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী জাহিদ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন তিনি।

২০২১ সালের কথা। সবে স্নাতক শেষ করেছেন জাহিদ হাসান। দুই চোখে তখন হাজারো স্বপ্ন তার। কিন্তু কোন স্বপ্নই পূরণ হয়নি। হঠাৎ করেই তার জীবনে ছন্দপতন ঘটলো। বিভিন্ন পরীক্ষার পর জানা গেলো তার দুটি কিডনিই বিকল। এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত! চিকিৎসক জানিয়ে দিলেন- জীবনের গল্প বাকি আছে অল্প।

বিষয়টি পরিবারের সবাই অসহায়ভাবে মেনে নিলেও মা বুলি বেগম (৫৬) হাল ছাড়লেন না। বুলি বেগম জাহিদকে পৃথিবীতে এনেছেন, সেই পৃথিবী থেকে মায়ের আগে সন্তান চলে যাবে অকল্পনীয় মনে হলো তার কাছে। অথচ উপায় তখন একটাই- কিডনি প্রতিস্থাপন। বুলি বেগম হাসি মুখে রাজি হলেন। ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি ঢাকার শ্যামলীতে সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে মায়ের দেওয়া কিডনি জাহিদের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়ে। এ যাত্রায় বেঁচে ফেরেন জাহিদ।

মায়ের দেয়া কিডনিতেই জাহিদ বেঁচে আছেন এখনও। তবে সেই কিডনির যত্ন নিতে গিয়ে বারবার হোচট খেতে হচ্ছে তাকে। গত কয়েকমাস ধরে বিভিন্ন জটিলতা অনুভব করছেন তিনি। প্রতি তিনমাস অন্তর কিডনি চেকআপের কথা থাকলেও গত ৬ মাস ধরে অর্থাভাবে কুলাতে পারছেনা জাহিদের পরিবার। বিভিন্ন মাধ্যমে হাত পেতেও কাঙ্খিত অর্থ জোগাতে ব্যর্থ পরিবারটি। দ্রুত চেকআপ এবং তদনুযায়ী চিকিৎসা না পেলে প্রতিস্থাপিত কিডনি বিকলের শঙ্কা রয়েছে জানিয়েছেন চিকিৎসক। তাহলে কি এবার হেরে যাবে অদম্য জাহিদ?

জাহিদ হাসানের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঠেকরপাড়া গ্রামে। জাহিদের পরিবার ২০০৪ সাল থেকে লড়াই করছে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে। সে বছর ব্লাড ক্যানসারে মারা যান তার ছোট বোন। যথাসাধ্য চেষ্টা করে বহু অর্থ খরচের পরেও বোনকে বাঁচানো যায়নি। সেই শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই ২০০৪ সালে জাহিদ বাবাকে হারান। তার বাবা ছিলেন বাসচালক। তারপর থেকেই পরিবারটি আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

জাহিদ হাসান বলেন, ৯ বছর বয়স থেকেই পিতৃহীন আমি জীবনের প্রতিটি পদে পদে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। সংগ্রাম করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করতে না করতেই শরীরের দুটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ড্যামেজ হয়ে যায়। সাথে জীবনের সকল আশা ভরসা শেষ হয়ে যায়। তবুও হাজার চেষ্টা করে নিজের মায়ের একটি কিডনি নিয়ে কোনোরকম বেঁচে আছি, কিন্তু এই বেচে থাকায় জীবনের সংগ্রাম খুবই প্রবলতর হচ্ছে আমার কাছে দিন দিন। নিয়মিত ওষুধ আর চিকিৎসার অভাবে মায়ের দান করা এই অঙ্গটিও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দিনদিন। ফলে এগিয়ে যাচ্ছি মৃত্যুর দিকে। এই রোগে আমার বাড়ি ভিটাও বিক্রি হয়ে গেছে বর্তমান আমার নিজের আশ্রয় বলতে কিছুই নেই। বোনের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে দিন পার করছি।

জাহিদের বড় বোন নুর নাহার জানান, ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর তারা প্রথম জানতে পারেন- জাহিদের দুটি কিডনি কাজ করছে না। রংপুর ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে গত ওই বছরের ৩ নভেম্বর সিকেডিতে ভর্তি করা হয় জাহিদকে। এরপর ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি রাতে মা ও ছেলের অস্ত্রোপচার হয়।

নূরনাহার বলেন, অনেকের সহযোগিতায় সে যাত্রায় আমার ভাই বেঁচে ফিরেছে। সব মিলিয়ে সেসময় ৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছিলো। এ জন্য ৩০ শতাংশ জমিসহ পৈতৃক ভিটাটুকুও বিক্রি করতে হয়েছে। কিন্তু এবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। চিকিৎসাভার বহন করতে আর পারছিনা। জরুরি চেকআপে পাঠানো দরকার, অর্থাভাবে পারছিনা। বেশিদিন চেকআপ অনিয়মিত হয়ে গেলে মায়ের দেয়া কিডনি রিজেকশন হবার আশঙ্কা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মায়ের দেয়া কিডনি প্রতিস্থাপনের পর থেকেই জাহিদের প্রতিমাসে প্রায় ১৫ হাজার টাকার মেডিসিন লাগে। প্রতি তিনমাস অন্তর চেকআপে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকা। এবার দীর্ঘসময় বিরতির জন্য সকল পরীক্ষা একসঙ্গে করতে হবে, এজন্য ব্যয় অনেকটা বেড়ে যাবে। সমাজসেবা অফিসে চিকিৎসা সহায়তার জন্য আবেদন করেছিলাম, কিছু টাকা দেয়ার কথা। কিন্তু দুই বছর ধরে ওই অফিসে ঘুরতেছি, কোন কাজ হয়না।

জাহিদ হাসানকে সহযোগিতা করতে পারেন যে কেউ। 01751000998 (বিকাশ/নগদ/রকেট) ও 01608170970 (বিকাশ/নগদ/রকেট)।

Facebook Comments Box
এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এই সাইটের কোনো লেখা, প্রচ্ছদ, ছবি, ভিডিও, কপিরাইট করা সম্পূর্ণ বেআইনি। © স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০১৮ দৈনিক সময়ের পত্রিকা।
Theme Customized By Arman IT