আদালত প্রতিবেদক:
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কান্ড ঘটিয়ে বহুল বিতর্কিত ও সমালোচিত হওয়া চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে করা মাদক মামলা চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি আমিনুল ইসলামের দ্বৈত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালত বলেন, পরীমণির বাসা থেকে আইস ও এলএসডি মাদক পাওয়া গেছে। সেই বিষয়টি বিচারিক আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। তবে তার বাসায় বিদেশি মদ পাওয়ার বিষয়ে আদালত বলেন, মদ সেবনের লাইসেন্স থাকা এবং মদে অ্যালকোহলের মাত্রা কম থাকার ক্ষেত্রে, মদ জব্দের বিষয়টি বাদ দিয়ে বিচার করতে হবে।
আদালতের এই আদেশের বিষয়ে পরীমণির আইনজীবী জেড আই খান পান্না জানান, মামলা বাতিল চেয়ে চিত্রনায়িকা পরীর আবেদন নিষ্পত্তি করে এই রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে নিম্ন আদালতে চলমান।
জানা যায়, এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি চিত্রনায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে করা মাদক মামলা চলবে কি না - এই রায়ের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেছিলেন হাইকোর্ট। ২০ ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালত আলোচিত এই মাদক মামলায় পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পিছিয়ে আগামী ৩১ মার্চ ধার্য করেন। মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য থাকলে ওইদিন পরীমণির পক্ষে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী আদালতে হাজিরা দেন। মামলাটি উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ শুনানি শেষে, আদেশ না হওয়া পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য আগামী ৩১ মার্চ দিন ধার্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৪ আগস্ট পরীমণির রাজধানীর বনানীর বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। পরে তাকে গুলশান থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই মামলায় তিন দফায় ৭ দিনের রিমান্ডে ছিলেন তিনি। ২৭ দিন জেল খাটার পর জামিনে কারামুক্ত হন পরীমণি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, এরপর একই বছরের ১৯ আগস্ট আরও একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট আবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ৩১ আগস্ট তৎকালীন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরের দিন তিনি কারামুক্ত হন। পরে একই বছরের ৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তফা পরীমণিসহ তিনজনের নামে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার জিআর শাখায় চার্জশিট জমা দেন। মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়।
এরপর ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ১০ এর বিচারক নজরুল ইসলাম তিনজনের নামে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন। অপর দুই আসামি হলেন- পরীর সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দিপু ও মো. কবীর হাওলাদার। এক পর্যায়ে মামলা বাতিলে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরী। গেলো বছরের ১ মার্চ আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট মামলা কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পাশাপাশি মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন।