ঢাকা প্রতিনিধি:
অদ্য রবিবার, ৬ অক্টোবর রবিবার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্রাব) এ বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির আয়োজনে ঘেচুয়া, সখিপুর উপজেলা, টাঙ্গাইল জেলার মোঃ চান মাহমুদ এর মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের বিরুদ্ধে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং তার পরিবারের উপর সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক ১৮৮ শতাংশ বসতবাড়ী ও জমি দখলের প্রতিবাদে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভিকটিম পরিবারের সদস্য শাহীন আল মামুন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইজিপি, যৌথ বাহিনীর টাংগাইল জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার, টাংগাইল জেলা প্রশাসক (ডিসি), এসপি ও সখিপুর উপজেলার টিএনও, ওসিসহ দেশবাসীর নিকট সাংবাদিক সম্মেলন ও আপনাদের মাধ্যমে আমি আমার বাবা চাঁন মামুদ এর নি:শর্ত মুক্তি ও পরিবাবোরের সকলের জন্য সার্বিক আইনি সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ঘেচুয়া মৌজায় সি, এস খতিয়ান ২১০ দাগ নং ১৫৭, ১৭৭ ও ২৩২ এ আমার বাবার দাদার নামে রেকর্ড হয়। তারপর আমার বাবার দাদা ইন্তেকাল করলে উক্ত জমির এস, এ রেকর্ড আমার দাদা ও তাঁর চাচাদের নামে লিপিবদ্ধ হয়। বর্তমানে বি,এস বা হাল রেকর্ডে পৌএিক ও ক্রয় সূত্রে আমার বাবার এবং আমার মায়ের নামে মোট ১৮৮ শতাংশ ভূমি রেকর্ড হয়। যাহার এ যাবত পুরো খাজনা আমার বাবা পরিশোধ করিয়া আসিতেছেন। আমরা উক্ত জমি জমি চাষাবাদ ভোগ দখল ও বসত বাড়ী তৈরী করিয়া বসবাস করছি। এমতাবস্থায় অবস্থায় গত ০৮/০৮/২০২৪ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার সকাল ৯ টার সময় বাসাইল গ্রামের এডভোকেট আহমদ আযম খান পিতা মৃত ধলা খলিফা তার তার পালিত লোক শাহজাহান সাজু, নাছির (কমিশনার), গনি আকবর, জাফর, হবি সরদার, সুবুর উদ্দিন, কবির উদ্দিন, টুটুল, কামরুল, হাজি ফরিদ, আউয়ালসহ ২০০ হতে ২৫০ জন লোক আমার বাড়ীতে এসে, আমার বাবাসহ পরিবারের সবাইকে নামিয়া চলে যেতে বলে।
আমার বাবা অনুরোধ করিয়া বলিয়াছেন, "ভাই আমিতো আপনার জায়গায় থাকি না, আপনি আমার কাগজপত্র দেখেন।"এই কথা বলার পর আজম খান রাগান্বিত হয়ে বলেন যে, "কাগজপত্র দেখার সময় নাই। তোদেরকে যে, ঘরের ভিতরে আটকিয়ে পোড়াইয়া মারি নাই এটাই তোদের সৌভাগ্য"। একথা বলিয়া আজম খান তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে দিয়ে আমার বাবাসহ পরিবারের সবাইকে এলোপাতাড়ি পিটাইয়া বাড়ী হতে বের করে দেয় এবং ঘর বাড়ী ভেঙে ফেলে দেয়।
আযম খান নিজে আমার ৬৯ বছরের বয়সের বয়স্ক বাবাকে লাথি মেরে উঠানে ফেলে দেয়। এডভোকেট আহমেদ আজম খানের সন্ত্রাসী বাহিনী আমার বাবা ও মা , আমাদের ভাই বোনদেরকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে এবং লাথি ঘুষি ও ধাক্কা ধাক্কি করে ও টাইনা হেসরাইয়া বাড়ী হতে বের করিয়া দেয়। আমার বাড়ীর ২ টা ঘর ভাঙ্গিয়া যাবতীয় আসবাবপত্র ২টি ট্রাক ভরিয়া নিয়া যায় এবং প্রায় ২০০ টি বড় বড় আকাশ মনি ও আম গাছ কাটিয়া ট্রাকে করে নিয়ে যায়"। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী এক শতাংশ জমির দাম এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকা থেকে এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা আর সে অনুযায়ী ১৮৮ শতাংশ জমির মূল্য ২৬ থেকে ২৭ কোটি টাকা।
আমাদের জায়গায় ও ঘর বাড়ীতে সারাদিন এই তান্ডব চালায় এবং ঐখানে খাসি জবাই করিয়া খাওয়া দাওয়া ও আনন্দ এবং আদিম উল্লাস করে। আযম খান হুমকি দিয়ে বলে যে, "যদি কোনো মামলা করস তাহলে তোকে সহ তোর ছেলে মেয়ে সবাইকে মেরে ফেলবো"। আজম খানের লোকজনেরা আমাদের বাড়ীর আশপাশে আজ ২ মাস যাবৎ সন্ত্রাসী বাহিনীকে দিয়ে পাহারা দিতেছে। আমরা বাড়ীর কেউ বের হতে পারি না। যেকোনো সময় আজম খান বাহিনীর লোকেরা আমার পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলতে পারে"। আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি গণমাধ্যমে লিখিত বক্তব্যে বলেন, সরকারের সকল স্তরের প্রশাসনকে ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিএনপিসহ সকল দলের নেতৃবৃন্দকে জানাতে চাই যে, আমার বাবা যখন আমদের ঘরবাড়ী, জায়াগা সম্পত্তি দখরের প্রতিকারের জন্য গত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং তারিখ সকাল ৯ টায় টাংগাইলে জেলা আদালতে ফোজদারী মামলা করার জন্য আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করতে যান সে খবর পেয়ে এডভোকেট আহমদ আযম খান তোর লোক জনের মাধ্যমে পেয়ে যান। এ সময় আদালত প্রাঙ্গনে অজ্ঞাত ১০/১২ জন বাবাকে হুমকি দিয়ে বলেন, “যদি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আযম খানের বিরুদ্ধে মামলা করো তবে তোমাকে সখিপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাথে বিভিন্ন মামলা দিয়ে জেলে পাঠাবো।
এড. আহমদ আযম খানের সরাসরি হস্তক্ষেপে আমার নিরীহ বাবাকে গত ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ২ টায় আমাদের ঘেচুয়া গ্রামের নিজ বাড়ী হতে সখিপুর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে একেই দিনে পেইন্ডিং মামলা দিয়ে সখিপুর থানা মামলা নং ০৩ তারিখ ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট ধারা ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/১১৪/৩৪ পেনাল কোড আদালতের মাধ্যমে জেলে প্রেরন করেন। সাথে সখিপুর থানার আরো ৩ টি মামলায় বাবাকে আসামী দেখায়- ১। সখিপুর থানা মামলা নং ০৪ তারিখ ২৫/০১/২০০৮ ইং ধারা- ৩২৩/৩৮৫/৫০৬/৩৪ পেনাল কোড, ২। সখিপুর থানার মামলা নং ০৩ তারিখ ০৬/০৭/ ২০০৮ ইং ধারা ২০০২ সালের এসিড অপরাধ দমন আইনের ৫(ক)/৭ ও ৩। সখিপুর থানার মাম,লা নং ০২ তারিখ ০৮/১১/২০০৮ ইং ধারা ৩৬৪-ক/১০৯ পেনাল কোড ।
আমাদের বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলার বিচারের ভার আপনাদের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের উপর ছেড়ে দিলাম। আমরা নিরীহ নিম্ন আয়ের মানুষ, আমার বাবাসহ আমরা তিন ভাই দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলাম। এখনও এক ভাই মালয়েশিয়ায় রয়েছে। আমার সাথে যে ভাই উপস্থিত হয়েছে তিনি সিঙ্গাপুরে থাকেন। আমার বাবা ও আমরা বিএনপির জন্ম থেকে ধানের শীষে ভোট দেই, আমারা বিএনপির সমর্থক। আমাদের পরিবারের কেউ আওয়ামী লীগ করেনা। আমরা এ সাংবাদিক সম্মেলন থেকে আমার বাবার নি:শর্ত মুক্তির দাবী জানাই এবং আমাদের পরিবারের সকলের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, আমাদের বাড়ী ঘর ও লুটকরা সম্পদ ফেরৎ চাই।
আমাদের ১৮৮ শতাংশ জায়গা ফেরত, বাড়ী ঘর লুটতরাজ বাবত ২০ লাখ টাকা নগদ ক্ষতিপূরণ দাবী করছি। আমার দাবি, আমাদের বাড়ী ঘর, সম্পদ লুণ্ঠন ও অন্যায় ভাবে দখল ও আমাদের উপর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার কারনে এডভোকেট আহমেদ আজম খানসহ তার সকল সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে দ্রুত তাদের সবাইকে গ্রেফতারের দাবি জানাই। আশাকরি সরকারের সকলস্তরের প্রশাসন আমাদেরকে আইনগতভাবে সকল ধরনের সহযোগিতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
চাঁন মামুদ এর পরবিারে পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন আমার মা মোসা: মোর্শেদা বেগম, বড় ভাই মো: মুসলেম। বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, আমরা আশা করবো বিষয়টি বাংলাদেশের সিনিয়র ও স্বনামধন্য আইনজীবী এডভোকেট আহমেদ আযম খান নিজেই সুরাহা করবেন এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আমরা লিখিত অভিযোগ জানাবো।