পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা জমি লিখে না দেওয়ায় বসতবাড়ির ভিতরাঙ্গীনায় টিনের বাউন্ডারী বেড়া ভাংচুরের সময় তার মা বাধা দিতে গেলে গর্ভধারিনী মাকে পিটিয়ে আহত করেছে এক ছেলে ও তার স্ত্রী। ছেলের এমন অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বিচার দাবি করেছেন ওই ছেলের শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা। শুধু তাই নই, ওই ছেলের নামে থানায়ও অভিযোগ করেছেন মারধরের শিকার জাহানারা খাতুন(৪৩)এর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪৭)।
১৯ জানুয়ারী দুপুর ২টায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের টুনিরহাট বৈরাগীপাড়া এলাকায়।
এঘটনায় থানায় অভিযুক্ত ওই ছেলের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে বড় ছেলে মিজানুর রহমান(২৭) এবং মিজানুরের স্ত্রী সাবানা আক্তার জেরিন(৩০)কে আসামী করে পঞ্চগড় সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, ছেলে মিজানুর রহমান তার স্ত্রীকে পৃথক করে আলাদা ভাবে বাড়ি করে দেয়ার পরেও শ্বশুর শ্বাশুরির পরামর্শে ভিটে বাড়ির জমির মধ্যে ৫ শতক জমি লিখে দেয়ার জন্য তার বাবা মাকে একাধিকবার প্রস্তাব দিয়েছিল।
বাবা তার ছেলের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে ছেলের শ্বশুর শ্বাশুরির কথামতে ভিটে বাড়ির টিনের বাউন্ডারি ভাংগচুর করার সময় মা বাধা দিতে গেলে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ছেলে মিজানুর ও তার স্ত্রী দুজনে মাথার চুলে ধরে টেনে হেছড়ে মাটিতে ফেলে মধ্যযুগী কায়দায় কিল, ঘুষি, মারধর ও গায়ের কাপড় ছিড়ে মারাত্নক জখম করেছে।
এ সময় মায়ের আতৎচিৎকার শুনে তার অপর পুত্র মোস্তাফিজুর রহমান এদের কবল থেকে আপন মাকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেও হামলার শিকার হয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে আহত মা ও তার ছোট ছেলেকে আশে পাশে লোকজন উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ওই জাহানারা খাতুন বর্তমানে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
ছেলের হাতে মারধরের শিকার শরীরের ক্ষতচিহ্ন সাংবাদিকদের দেখিয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে ওই ছেলের বিচার দাবি করেন মা জাহানারা খাতুন।
জাহাঙ্গীর আলম জানান, গেল বছরে ৩০ মার্চ একই কায়দায় জমি লিখে চাইলে আমি জমি লিখে না দেয়াতে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে মারধরে গরুত্বর জখম করলে আমি কোন উপায় না পেয়ে আমি বাদী হয়ে ছেলে ও তার স্ত্রীসহ একাধিক আসামীর বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করি। যাহার মামলা নং-সি,আর ২২৮/২০২৩। এই মামলা করাতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলার হুমকি দিলে আমি তাদের নামে আবারও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌ:কা:বি: ১০৭/১১৭(সি)ধারা মতে ১৯১/২০২৩ নং-মামলা আনয়ন করি।
এই মামলা কয়েক মাস চলমান থাকায় আসামীগন কোটে হাজির হয়ে মা বাবার উপর আর মারধর বা অন্যায় করিবনা মর্মে গেল বছরের ২৩ অক্টোবর মুচলেকা প্রদান করেন। মামলা চলমান থাকার পরেও বাড়ি ভাংচুরসহ এখনো আমার এবং আমার স্ত্রীর উপর অন্যায় ভাবে নির্যাতন করছে এই পাষন্ড ছেলে ও তার স্ত্রী। এর বিচার কি আমরা পাবোনা। এই পাষন্ড ছেলের উচিৎ বিচার দাবী করছি। এহেন কার্মকান্ড যেন কোন মা-বাবাকে পেতে না হয়।
এদিকে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান জানান, আমার দাদা আমাকে এবং আমার ছোট ভাই ও বাবার নামে একটি দলিলে এই ৭শতক জমি দান করে গেছেন। তাদের জমি বাদে আমার জমিতে ঘড় তুলার সময় আমি বাধা দিতে গিয়ে তারাই আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে মারপিট করে আমি ও আমার স্ত্রী মা এর গায়ে হাত তুলি নাই।
এবিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) প্রদিপ কুমার রায় বলেন মারপিটের ঘটনার বিষয় থানায় অভিযোগ হয়েছে। বিষয়গুলো তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।