লেখক: মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা
ঈদ উৎসব ছিলো গতকালকে। মসজিদের শহর ঢাকায় আমারা কতজনকে স্মরণ করেছি,মসজিদের সন্মানিত খতিব কিংবা,ইমাম সাহেব কতজন এর নাম উল্লেখ করে তাঁদের অবদানের কথা উচ্চারণ করে দোয়া করেছেন।
দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা তাদের অনেককে মনে করে তাদের বাড়ি গিয়ে ঈদ উৎসব ভাগাভাগি করে নিয়েছে। কিন্তু ১ বছর যেতে না যেতে আমাদের বোধের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের স্মৃতির পাতা থেকে একটি নাম হারিয়ে গেছে। তিঁনি কি করেননি আমাদের জন্য? মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে, চিকিৎসা ক্ষেত্রে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটি নাম কালজয়ী অধ্যায় ছিল। দেশের বিপদ,সাধারণ মানুষের বিপদে যিনি থেকে ছুটে আসতেন। করোনা কালীন সময়ে যিনি দেবতার ভূমিকা পালন করছেন। সেই মানুষটিকে আমরা কিভাবে ভুলে গেলাম?
যার মৃত্যুতে দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি,প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবাই শোক প্রকাশ করেছেন। সেই মহান ব্যাক্তির মৃত্যুর ১ বছর হতে না হতে ভূলে গেলাম।সরি স্যার আমাদের বোধের মৃত্যু হয়েছে। আমরা গর্বিত জাতি।আমাদের রয়েছে ৫২, ৬৬,৬৯,৭১ এর মতো মহান অর্জন। আর এইসব অর্জনের আপনিও ছিলেন কিংবদন্তি। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত মৃত্যু গণতন্ত্রের জীবন্তরুপ ছিলেন আপনি।আর সেই আপনাকে যারা ভুলে গেছেন তারা কিভাবে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে?আপনার নাম ব্যাবহার করে যারা নিজেকে জাতে উঠিয়েছে তারাও কতো অকৃতজ্ঞ।
আপনার নাম কেউ একবার মনে করেনি।মনে হয় প্রয়োজন বোধ করেননি? আর এ কারনে জাতির তাদেরকে নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে, হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, নিজেকে স্থির রাখতে পারছি না। আমাকে আপনি ক্ষমা করে দেবেন। যতবার আপনাকে ডেকেছি আপনি ছুটে আসতেন। হুইলচেয়ারে করে এসে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কথা বলেছেন। কথা বলে সেখান থেকে সরাসরি হাসপাতালে গিয়ে নিজের চিকিৎসা নিয়েছেন তবুও থেমে থাকিননি।২০২৩ সালের ১১ এপ্রিল আপনি নিথর হয়ে গেছেন। আপনার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের মাটিতে, নিজের প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে চিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে চলে গেছেন। জাতি সেদিন গভীর শ্রদ্ধা ও সন্মান এর সাথে শায়িত করেছে। সেখানে আমিও ছিলাম। সেই আপনাকে আমরা ভুলে গেছে? হয়তো সকাল হলে আপনার জন্য কিছু কর্মসূচির কথা শুনবো।গতকাল সবাই কি ঘুমিয়ে ছিল? সারারাত আমি তো ঘুমাতে পারিনি। কি আর করার?
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কথা স্মরণ করেছি। একজন অসাধারণ সাহসী গুণী মানবিক হৃদয়বান আলোকিত চিকিৎসক এর কথা স্মরণ করেছি। গণতন্ত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী স্যারকে স্মরণ করেছি।
স্যার আপনি আমাদের ক্ষমা করেলেও বোধের আগুনে পুড়ে মরে যাচ্ছি। ইন্না-লিল্লাহ ওয়া ইন্না এলাহি রাজিউন। আমাদের বিবেক এবং বোধের মৃত্যু হয়েছে।
মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা।
চেয়ারম্যান,বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি।