নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকার পতনের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি'র ২৪ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক নাগরিক মানববন্ধনে এ আহ্বান জানান তিনি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রতিবাদ করা যদি ছাড়েন তাহলে আপনার জীবন আরও দুর্বিষহ হবে। যেরকম করে আমরা বলছি, গায়ের জোরে ভোট করে তিনবার জিতেছেন (আওয়ামী লীগ সরকার)। কিন্তু একবার পরাজিত হবেই। তখন সমস্ত কিছু কড়ায় গন্ডায় আদায় করে নিবো আমরা। যত পাপ করেছেন, যত অন্যায় করেছেন- সেগুলোর মাফ এদেশের জনগণ করবে না। সেই লড়াই চালিয়ে যান, অব্যাহত থাকুক।
তিনি বলেন, কোন ভোট দেশে হয়নি। কিন্তু তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলছেন, এতো ভোট ৭৫'র পরে আর কখনো হয়নি। ৯৫ ভাগ মানুষ ভোট দেয়নি, উনি বলেছেন, মানুষ প্রাণ খুলে ভোট দিয়েছেন। আমরা একটা নির্বাচিত সরকার। এই মিথ্যাচার এখন চলছে দেশে।
রাজধানীর বেইলী রোডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে মান্না বলেন, অগ্নিকাণ্ড যেসব মানুষ আহত হয়েছে তাদের সেবা ও রক্ত দেয়ার জন্য হাসপাতালে সেরকম ভিড় দেখা যায়নি, যেরকম ভিড় বেইলি রোডে দেখা গিয়েছিলো। আর গত ১৫ বছরে এদেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা, মমত্ববোধ, সহমর্মিতা এবং ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো, এই কাজগুলো আসতে আসতে ঝরে যেতে বসেছে।
সোনিয়া ইসলাম কে কারা গণ ধর্ষণ করেছে?কাদের প্রশ্রয়ে তারা এত সাহস পেয়েছে। দিনেদুপুরে তাদের পাঁচ তলা দখল করে নিয়েছে।সময় হলে সব কিছুর হিসাব দিতে হবে।
বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি'র চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক সাইফুল হক, জাগপা একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, সুপ্রীম কোর্ট এর সিনিয়র আইনজীবি এডভোকেট,আবেদ রাজা, সাংবাদিক মো.মতিউর রহমান সরদার,অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম, ডাঃ সরোয়ার হোসেন, সমমনা পেশাজীবী গনতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়কারী সাইদুর রহমান।
১ মার্চ ২০২৪ইং বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির ২৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠন ডাক দিয়েছে ‘নির্যাতিত-নিপীড়িত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের নির্যাতিত পরিবারের পাশে এবং ধর্ষক ও মাদক সম্রাট স্বপন গংদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গুম থেকে ফিরে আসা ছাত্রনেতা তরিকুল ইসলাম তারেক, গণনিযাতনের শিকার সোনিয়া ইসলাম, স্বামী বাবু ইসলাম, বড় বোন নাসিমা বেগম ও তার পরিবারের সদস্য, গুম হওয়া ইসমাইল হোসেন বাতেনের স্ত্রী নাসরিন আক্তার স্মৃতি, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আরশাদ এর মেয়ে খুশবু।
বক্তারা বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে, আজকে এই মানববন্ধনে ক্ষতিগ্রস্থ এমন কিছু পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত হয়েছেন, যাদের বর্ণনা শুনে আমরা হতবাগ। আমরা কি স্বাধীন দেশে বসবাস করছি। কিভাবে দিনের আলোতে প্রকাশ্যে ৫ তলা ভবন দখল সহ বাড়ির ২৫ লক্ষ টাকার মালামাল লুটপাট করে নেয়। ধর্ষক স্বপন দিনের পর দিন সোনিয়া আক্তারকে আটকে রেখে নিজে ধর্ষন করে এবং পরবর্তীতে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা গণধর্ষণ করে। সেই পরিবারের সবাই এখন পালাতক জীবন-যাপন করছে।
এ বিষয়ে আদালতে মামলা, থানায় জিডি এবং সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনসহ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, পুলিশ কমিশনার বরাবর ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা স্মারক লিপি দিয়েও বিচার বা নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। এছাড়াও খুলনার সোনাডাঙ্গার ৫ মাসের অন্তসত্বা সুমাইয়া তাসনিম স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হয়ে সন্তানের অধিকারের আশায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তার স্বামী কানন ২৫ লক্ষ টাকার যৌতুক দাবি করেছে ও টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে তালাক দিয়েছে এবং হুমকি দিয়েছে, যদি কোন মামলা মোকাদ্দমা করা হয় তাহলে তোর সন্তানের স্বীকৃতি দেব না। এছাড়াও গুমের শিকার পরিবারের সদস্যরা তাদের স্বজনদের ফিরে পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।