পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
প্রকৃতির প্রাণ-প্রাণি, গাছ-গাছালি, বন-বাদর মানব সভ্যতার নিষ্ঠুরতায় একের পর এক ধ্বংস হতে থাকে। মানবজাতির হাতে প্রকৃতি পরিবেশের পরিপূরক প্রাণিকূলের নির্মম হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রাণিরাজ্যের প্রাণিরা তাদের ক্ষোভ, দুঃখ পশুরাজকে জানায়। অভিযোগের ভিত্তিতে পশুরাজ সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে রায় দেয়, পৃথিবীর মানুষরাই অমানুষ।
লেখক ও নাট্যকার রহিম আব্দুর রহিম’র সময়োপযোগী নাটক ‘পশুর বয়ান’র নাট্যভাব এটি। পঞ্চদশ জাতীয় শিশু কিশোর ও যুব নাট্যোৎসবের ষষ্ঠদিন (২৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয়েছে রহিম আব্দুর রহিম রচিত ও নির্দেশিত এই নাটক।
পঞ্চগড় করতোয়া কালেক্টরেট আদর্শ নিকেতন প্রযোজিত এই নাটকে প্রাণ-প্রাণিদের আর্তনাদ প্রাঞ্জল ভাষায় উপস্থাপন করে শিশু নাট্যকর্মীরা।
নাট্যভাবে আরো রয়েছে- ‘প্রকৃতির আলো-বাতাস, নদী-নালা, খাল-বিল, গাছ-পালা, পাহাড়-পর্বত’ সবাই সবার অবস্থান থেকে নিজেকে শ্রেষ্ঠ এবং রাজা মনে করে অহংকার করে। একসময় এদের মধ্যে কে বড়, কে ছোট এই নিয়ে ভীষণ বাকযুদ্ধ শুরু হয়। পরে দিগন্ত জুড়ে আকাশ তাদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের মিমাংসা করে এই বলে যে, প্রকৃতির সকল প্রাণ-প্রাণিরা যদি মাটি নামক ভূস্তরকে মা বলে মেনে নেয় এবং এই মায়ের সেবা করে তবে সবাই রাজা হতে পারবে। তার কথা সবাই মেনে নিলে দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে।
নাটকের শ্রেষ্ঠাংশে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছে- নবম শ্রেণির মগ্ন, আবিদুর রহমান, বর্ণ, রুবায়িত, আলভী, মুরছালিন, ইমরান, আলিফ, অষ্টম শ্রেণির আল আমিন, সাদ, সপ্তম শ্রেণির সাহিক ও ষষ্ঠ শ্রেণির আহনাফ।
নাটক শেষে আয়োজক কমিটি অভিনেতাদের মাঝে সনদ তুলে দেন। পরে ৬টি দলের মঞ্চকুঁড়ি পদক প্রাপ্ত শিশু নাট্যকর্মীদের নাম ঘোষণা করা হয়। পঞ্চগড় থেকে মঞ্চকুঁড়ি পদক পান পঞ্চগড় বিদ্রোহী শিশু কিশোর থিয়েটারের মো.নাসিবুর রহমান নাবিল।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও পিপলস থিয়েটার এসোসিয়েশন আয়োজিত এবার উৎসবে দেশের ৬৪ জেলার শতাধিক নাট্যদলের একহাজার ১২৮জন শিশু-কিশোর ও যুব নাট্যকর্মীরা অংশ গ্রহণ করছে।
গত ২৩ ফ্রেবুয়ারি এই উৎসবের উদ্বোধন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ ও বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান। বৃহৎ এই উৎসবের সমাপনী পর্দা নামবে ৩ মার্চ রাত ৮টায়।