স্টাফ রিপোর্টার : ইকবাল বাহার
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় সাকোয়া জামিলাতুন নেছা ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলার বিচার চেয়ে এবং অধ্যক্ষের অপসারনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার সাকোয়া জামিলাতুন নেছা ফাজিল মাদরাসার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মাদরাসা মাঠে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মাদরাসার ফাজিল ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী পারভেজ ইসলাম, ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান মিম, প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা বাবুল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এসময় প্রতিষ্ঠানটির সর্বস্তরের শিক্ষকবৃন্দসহ শতাধিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের, সাকোয়া জামিলাতুন নেছা ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মফিজ উদ্দীন গত কিছুদিন আগে মাদরাসায় অনিয়ম দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ছাত্র জনতার তোপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এর কয়েকদিন পরেই তিনি মাদরসার ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ে আবারো স্বপদে এসে বসেন। এরই মাঝে গত রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অধ্যক্ষের যোগসাজসে মাদরাসায় আসেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাবুল হোসেনসহ কতিপয় সন্ত্রাসীরা। তারা এসেই মাদরাসার গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে বিভিন্ন শ্রেণীর ৮/১০ জন শিক্ষার্থীকে বেধরক মারধর করে তারা। পরে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বক্তারা অধ্যক্ষকে অবিলম্বে বহিস্কার করাসহ দ্রুত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ৫ দফা দাবি তিন দিনের মধ্যে মেনে নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন তারা।
এ বিষয়ে মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ মাওলানা মফিজ উদ্দীন বলেন, আমি অসুস্থ্য, এক মাসের ছুটিতে আছি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে আমার জড়িত থাকার বিষয়টি ভিত্তিহীন। আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ওপর যারা হামলা করেছে আমিও তদন্ত সাপেক্ষে আমিও তাদের বিচার চাই। যারা আমার অপসারণ চাচ্ছে, তারা কারো প্ররোচণায় এমন দাবি করছে।
সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটিতে আছি। বর্তমানে কিডনী জনিত রোগে রংপুরে চিকিৎসাধীন। অনেকে অভিযোগ করতেই পারে। আমি অসুস্থ মানুষ। তাছাড়া ইন্ধন কেন দিতে যাবো। শুনেছিলাম গণিত বিষয়ের শিক্ষকের নাকি নারী ঘটিত বিষয়ে কয়েকজন অভিযোগ দিতে মাদরাসাতে যান। তারা পরে চলেও যান। তবে মারামারির বিষয়টি পরে শুনেছি। আর আমি অসুস্থ মানুষ শিক্ষার্থীদের দেখতে কিভাবে যাবো। শুনলাম তারা নাকি আমার বহিস্কার চায়। এটা প্রশাসনিক ব্যাপার। তারা যা ভালো মনে করে করতে পারেন।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, গত রবিবার একটি ইনসিডেন্ট হয়েছিল। স্থানীয় এক ব্যাক্তি এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। পরে এনিয়ে একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটে বলে জেনেছি। তবে সোমবার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেছি। আর সেখানকার অধ্যক্ষ একবার সেচ্ছায় পদত্যাগ করেন বলেও চিঠি পাই। পরে আবার তিনি দ্বায়িত্ব নিয়ে চিঠি দিয়ে বলেন তাকে বাধ্য করা হয়েছিল। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি আরবী বিশ্ববিদ্যায়ের অধিভূক্ত। তারাও ব্যবস্থা নেবেন। আর আমরা ও তদন্ত করছি।