ঢাকা প্রতিনিধি: সাবিনা ইয়াসমিন
৫ জুন প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী পালিত বিশ্ব পরিবেশ দিবস। সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযথভাবে ভাবে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়। দিবসটি কেন্দ্র করে প্রতিটা দেশে আলাদা আলাদা প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়। ২০২৪ সালে “করবো ভূমি পুনরুদ্ধার,রুখবো মরুময়তা” অর্জন করতে হবে মোদের খরা সহনশীলতা” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস।
এই দিবস উপলক্ষ্যে দেশে বিভিন্ন সামাজিক
ও রাজনৈতিক সংস্থা গুলো বিভিন্ন কর্মসূচি করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় এশিয়ান নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৫ জুন ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করেন।
মাসব্যাপী উক্ত কর্মসূচির উদ্বোধন করেন এশিয়ান নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব মোহাম্মদ আলী।
এই সময়ে বক্তব্যে রাখেন জাতীয় মানবাধিকার সমিতি’র চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসাইন ঈসা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক ফাহিম আহমেদ, সমাজ সেবক ও সংগঠক মনিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মোঃ ফরিদ গাজী।
এই সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ঠিকমতো বজায় রেখে মানুষ যাতে এই পৃথিবীর বুকে অন্যান্য সমস্ত জীবের সাথে একাত্ম হয়ে এক সুন্দর পরিবেশে বেঁচে থাকে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করাই বিশ্ব পরিবেশ দিবসের উদ্দেশ্য।
বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে (জলবায়ুর প্রভাব), এর কারণে বিশ্ব পরিস্থিতি আজ ভয়াবহ অবস্থা।
শিশুদের অনাগত ভবিষ্যতের উপর জলবায়ুর প্রভাব মারাত্মক ভাবে পড়বে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বব্যাপী এই জলবায়ু বিষয়ক বিভিন্ন সভা সেমিনার হলেও এর কোন ফলপ্রসূ হচ্ছে না।
প্রাপ্তবয়স্কের পাশাপাশি শিশুদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে। মানুষের ওপর জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবের প্রতি শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় দুর্বল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমান করে যে সারাবিশ্বে বিদ্যমান রোগের বোঝার ৮৮% পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সাথে সম্পর্কিত। দি ল্যানসেটে স্বাস্থ্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর পর্যালোচনায় শিশুদের জলবায়ু পরিবর্তন দ্বারা সবচেয়ে খারাপভাবে প্রভাবিত হিসেবে বলা হয়েছে।
শিশুরা সবদিক দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি সংবেদনশীল ।জলবায়ু পরিবর্তন শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্য এবং কল্যাণকে প্রভাবিত করে। জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে শিশুদের প্রভাবিত করে তা দেশের ভেতরে এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য নির্ধারণ করে।জলবায়ু পরিবর্তনে বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ায় শিশুদের কোনো বক্তব্য বা মনোযোগ নেই। এবং স্বল্প আয়ের দেশে- বসবাসকারীরা উচ্চমাত্রায় রোগের বোঝায় ভোগে এবং তারা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি মোকাবেলা করতে কম সক্ষম।
এই সময় জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হলে বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অত্যান্ত জরুরী এবং বাধ্যতামূলক। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে মানুষকে সজাগ ও সচেতন করতে হবে।
বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে,পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হবে।পলিথিন সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে,পারমানবিক বলতে সব কিছুই বন্ধ করতে হবে। যেখানে সেখানে ময়লা না ফেলে নিদিষ্ট স্হানে ময়লা ফেলতে হবে,কলকারখানায় কালো ধোঁয়া নির্গমন কমিয়ে আনতে হবে। সিএফসি নির্গত হয়- এমন যন্ত্রপাতির ব্যবহার কমাতে হবে, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে এবং গাছের পরিচর্যা নিতে হবে।
প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে, পরিবেশ সম্মত নিয়ম নীতিমালা অনুসরণ করে কারখানা স্থাপন করতে হবে, পরিবেশ বিষয়ক কর্মকাণ্ড সরকারের ভূমিকা বেশি থাকতে হবে, পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থা গুলোকে কাজ করার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান করতে হবে, পরিবেশের উপর বাজেট বৃদ্ধি করে সেই মোতাবেক কাজ করতে হবে এবং পরিবেশ বিষয়ক কঠোর আইন প্রণয়ন করতে হবে।
আমরা প্রত্যাশা করি এই জলবায়ুর প্রভাব কমাতে বিশ্বের সকল দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে অচিরেই এই বিশ্বব্যাপী সমস্যার সমাধানে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।