পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড় সদর উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় গরুর সঙ্গে বাংলাদেশি কৃষকের তিনটি গরু অন্যায়ভাবে আটকের অভিযোগ ওঠেছে বিজিবির বিরুদ্ধে।
উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের ভিতরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেন স্থানীয়রা। এই সীমান্ত ফাঁড়িটি নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটলিয়নের আওতাধীন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) এই ফাঁড়ির টহলদল ভারতীয় অবৈধ পথে আসা দাবি করে তিনজন দরিদ্র কৃষকের তিনটি গরু আটক করে। পরে গরু তিনটি ফেরত চাইলে উল্টো ভয়ভীতি দেখানো হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্য ক্যাম্পে গিয়েও গরুগুলো ফেরত আনতে পারেনি।
স্থানীয়রা জানান, অমরখানা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম ধোপাপড়া। এই গ্রামের গৃহস্থ্যরা যুগযুগ ধরে সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশি ভূ-খন্ডে গরু-ছাগল বেধে ঘাস খাওয়ান। গত মঙ্গলবারও (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশি কৃষকদের গরু-ছাগল সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশি জমিতে ঘাস খাচ্ছিলো। এর মধ্য থেকে তিনটি গরু ভারতীয় দাবি করে ফাঁড়িতে নিয়ে যায় বিজিবির টহল দল।
ধোপাপাড়া এলাকার কৃষাণী শিউলি আক্তার বাছুরসহ গরু বেধেছিলেন সেখানে। তার গরুটিও নিয়ে গেছে বিজিবি, তবে বাছুর নেননি তারা। শিউলি আক্তার বলেন, আগেও একই জায়গায় গরু বেধেছি। বিজিবি কখনো কিছু বলেনি। অথচ গতকালকে কোন কারণ ছাড়াই গরুটি নিয়ে গেলো। আমরা গরিব মানুষ, গরুর দুধ বিক্রি করে সংসারের বাড়তি আয় হয়। কিন্তু ২৪ ঘন্টা পার হলেও গরুটি দিচ্ছেনা বিজিবি, বাছুরটা কাল থেকেই ছটফট করছে।
একই এলাকার আফাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের পালিত গরু ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে বিজিবি বলছে, এগুলো নাকি অবৈধপথে ভারত থেকে আসা গরু। গরুগুলো ফেরত না দিলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য একরামুল ইসলাম বলেন, বিজিবি ৪টি গরু আটক করেছে, এরমধ্যে একটি ভারত থেকে অবৈধপথে আসা। বাকীগুলো বাংলাদেশি কৃষকের পালিত গরু। যেই তিনজনের গরু ভারতীয় বলে বিজিবি আটক করেছে তারা অত্যন্ত সহজসরল। গরুগুলো উদ্ধারের জন্য আমি এবং চেয়ারম্যান মহোদয় ক্যাম্পে গিয়েছিলাম, বিজিবি আমাদের কথা শুনেনি। বিজিবি বলছে সব গরুগুলোই চোরাকারবারিরা নিয়ে আসতেছিলো, সেখান থেকে আটক করা হয়েছে। যদিও বিজিবির এই বক্তব্য সঠিক নয়। আমরা বিজিবিকে বলেছি সঠিকভাবে তদন্ত করতে, কারা গরুর প্রকৃতমালিক খুঁজে বের করতে। আমাদের কথা বিজিবি শুনেনি।
তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকার কোন বাড়িতে কয়টি গরু আছে, সেই তথ্য গরুর বিবরণসহ ক্যাম্পে আছে। সেই নথি বের করলেও গরুগুলো কার বের করা যায়, কিন্তু সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের বিজিবি একগুয়েমি করে গরুগুলো আটকে রেখেছে।
এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজিবি। ওই ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুঠোফোনে বলেন, গরুগুলো দিনের বেলা মেহেদী নামের এক চোরাকারবারি ভারত থেকে অবৈধপথে নিয়ে আসতেছে এমন খবরে আমাদের টহলদল সেখানে যায় এবং মোট ৪টি গরু আটক করে।