প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
ব্যাবসায়ী ও রাজনীতিক মাসুম হত্যার প্রায় দুই বছর পার হতে চললেও হত্যাকারী খুনি শামিম আহমদ ফয়েজ রহস্যজনক কারণে এখনো গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনছে না আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনী। খুনি শামিমকে গ্রেফতার না করা রহস্যজনক ভুমিকা হিসেবে মনে করছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষেররা। প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘোরাফেরা করলেও কেন খুনি শামিম আহমদ ফয়েজ তাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ, সেই রহস্যের কিনারা করতে পারছে না হত্যার শিকার মাসুমের পরিবার, আত্মীয়স্বজন, এলাকার সাধারণ মানুষ ও বন্ধুমহল। তারা অবিলম্বে মাসুমের হত্যাকারী খুনি শামিম আহমদ ফয়েজকে গ্রেফতার করে বিচারের আওয়তায় আনার জন্য ছাত্র গণ আন্দোলনে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মাসুমের হত্যাকারীর বিঁচারের দাবীতে খুনি শামিম আহমদ ফয়েজের বিচারের দাবীতে স্থানীয় এলাকায় ও বেশ কিছু কর্মসূচি, প্রতিবাদ সমাবেশের পাশাপাশি মানববন্ধন করেছে নিহত মাসুমের পরিবারসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ ও। কিন্তু আজও খুনি শামিম আহমদ ফয়েজকে গ্রেফতার বা আইনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি।
মাসুম হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে মানবাধিকার জোট শুক্রবার (১৮ অক্টোবর), দুপুর ১২টায় রাজধানী ঢাকা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মাসুম হত্যার খুনি ফয়েজকে গ্রেফতার করে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে নিয়ে আসা জন্য মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানবাধিকার জোটের মহাসচিব মিলন মল্লিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার সংগঠক মোঃ পারভেজ হোসেন, মোঃ কামাল হোসেন, তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী, জাতীয় মানবাধিকার জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
এসময়ে মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রশ্ন রেখে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুনি শামীম আহমদ ফয়েজকে কেন প্রশ্রয় দিচ্ছে তা জানতে চায় এলাকাবাসীসহ মানবাধিকার সংগঠন। খুনিদের গ্রেফতার করতে কেন ব্যর্থ হয়েছে, প্রশাসনের কাছে তারও জবাব চান। মাসুমের খুনিদের বিচার না হলে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে যাবে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অতিষ্ট বিশ্বনাথের মানুষ। কিসের লোভে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছেনা তাও জানতে চায় এলাকাবাসী। আগামী ৭ দিনের মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে প্রধান উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হবে বলে তিনি ঘোষণা দেন।
নিহত মাসুমের বাবা আজাদ মিয়া বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হয়তো তার কাছে থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ফয়েজকে গ্রেফতার করছে না। না হয় এখনও মাসুসের হত্যাকারী আসামি (শামীম আহম ফয়েজকে) গ্রেফতার করতে পারেনি কেন?
পুলিশের এমন উদাসীনতায় আওয়ামী লীগ নেতা, আজাদ মিয়া হাতাশা প্রকাশ করেছেন । পুলিশের রহস্যজনক আচরনে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। স্থানীয়রা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, মাসুমের হত্যাকারী প্রধান আসামি শামীম কে কেন আজ পর্যন্ত পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি কোন কারণে তা আমাদের জানা নেই? অতিসত্বর আসামি শামীমকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জন্য জোড়ালো দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী মনে করেন চাইলে যে কোন সময় সন্ত্রাসী শামিমকে গ্রেফতার করতে পারে পুলিশ।কিন্তু তার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে গ্রেফতার করছে না পুলিশ।
এলাকাবাসী মনে করেন, খুনি শামীম যত প্রভাবশালীই হোক না কেন কিংবা পালিয়ে থাকুক না কেন তাকে গ্রেফতার করা হোক। অনতিবিলম্বে তাকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শ্বাস্তির দাবী জানিয়েছে নিহতের পরিবার । খুনি শামীমকে আর দেখতে চায় না এলাকার মানুষ। তার ফাঁসি চায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী। সেই সাথে মাসুম হত্যার সাথে আরও যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২২ মার্চ নিখোঁজ হয় মাসুম । নিখোঁজের ৩ দিন পর সিলেটের বিশ্বনাথের বিশিষ্ট রাজনীতিক আজাদ মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়ার(২৫) লাশ সুরমা নদী থেকে উদ্ধার পরে পুলিশ । ২৫ মার্চ রাতে সুরমা নদীতে মৃতদেহ দেখতে পান এলাকার মানুষ। পরে পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধার করে নিখোঁজ মাসুমের লাশ সনাক্ত করে পরিবার।
আওয়ামী নেতা আজাদ মিয়া তার নিজ ভাতিজা শামীম আহমদ ফয়েজ কে সন্দেহ করে ২৬ তারিখ মামলা করেছেন। আজাদ মিয়া মনে করে পূর্ব শত্রুতার জেরে তার ছেলেকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়। তিনি বলেন, শামীম তার ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিলো।
হত্যাকাণ্ডে শামীম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা জড়িত দাবী করে, তাকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান