স্টাফ রিপোর্টার : ইকবাল বাহার
শেখ হাসিনা সরকার নিয়ে বেশি আলোচনা করতে চাই না। আগামী দিনে বাংলাদেশের পদ বিনির্মাণের জন্য। শেখ হাসিনার রাজনীতি নিয়ে মানুষের কাছে ছোট দুটি কথা বলবো। শেখ হাসিনা যে রাজনৈতিক কলাকৌশল সেটা কি পর্যবক্ষন করলে দেখা যায়। শেখ হাসিনার রাজনীতি দুটি মূলনীতির উপর। প্রথম রাজনৈতিক দর্শন ছিল প্রতিশোধের রাজনীতি। ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ সাল বাংলাদেশের মানুষ যে বাকশালের দ্বারা নিপীড়িত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে বেশী যুবকের প্রাণহানি হয়েছে ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আল্লামা মুহাম্মদ মামুনুল হক, রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টায় পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস পঞ্চগড় জেলার উদ্যোগে নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণ-সমাবেশে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে আমার মায়ের সন্তানদের হত্যা করেছিল পাক হানাদার বাহিনীরা। ৭১ থেকে ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত আমার ত্রিশ হাজার মায়ের বুক এবং কোল খালি করেছে বাকশালীরা। এবং এই বাকশাল ছিল শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল। সেই বাকশালের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সংঘঠিত হয়েছিল ৭৫ এর ১৫ আগস্ট। সেখানে নারী পুরুষ শিশু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল। সেটার জন্য আমরা সমবেদনা জানাই কিন্তু কথা হল ৭৫ এর ১৫ আগস্ট কেন তৈরি হয়েছিল, কেন ৩০ হাজার মায়ের কোল খালি হয়েছিল, কেন সিকদারগনকে হত্যা করা হয়েছিল। কেন স্বাধীন বাংলাদেশে এভাবে ক্রসফায়ারের অশুভ সংস্কৃতি চালু করে, কষ্ট যন্ত্রের নিপীড়নে সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে ৫০ বছর মায়া কান্না করে গেলেন। কেন আপনার ভাইয়ের রক্তের দাম আছে, এদেশের ৩০ হাজার ভাই বোনের রক্তের দাম আপনার কাছে না থাকলে, এদেশের মানুষেরও কাছে আপনার বাব ভাইয়ের রক্তেরও কোন দাম নাই। এরপরে যেটা করলেন, শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তিনি বললেন। যে জাতি তার বাবাকে হত্যা করেছে, তিনি সেই জাতির কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন। তারপর ঘোষণা দিয়ে নামলেন প্রতিশোধের রাজনীতিতে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনার ৫০ বছরের রাজনীতি ছিল প্রতিশোধের রাজনীতি।
মহাসচিব বলেন- এই প্রতিশোধ তিনি কার কাছ থেকে নিয়েছেন বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে, এই জাতির কাছ থেকে। এইজন্যেই বিশ্ব দরবারে কোনদিন তিনি মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দেন নাই, তার সমস্ত আয়োজন সার্থক করেছেন। দেশটাকে স্বাধীন রাখতে চান নাই। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সন্তুষ্ট ছিলেন না। তিনি আর একটা দেশের মুখ্যমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। আর এই জন্য বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিদকে ধষিয়ে দিয়ে, এই স্বাধীন দেশ ও জাতিকে একটি কলঙ্কিত জাতী করতে চেয়েছিলেন। মেগা মেগা প্রকল্পের নামে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা মেগা দুর্নীতি করে বাংলাদেশটাকে খোবলা করে দিয়েছেন। কলা খেয়ে খোসা যেমন ফেলে দেয়। ঠিক তেমনি শেখ হাসিনা বাংলাদেশটাকে চুষে খেয়ে কোন রকম ১৬ টা লাগেজ ভর্তি করে সর্বশেষ যা ছিল তা নিয়ে নিজের বোনটাকে বগলদবা করে হেলিকপ্টারে উরে নরেন্দ্র মোদির ঘরে গিয়ে পড়েছেন।
মামুনুল হক বলেন, যারা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন, এরপরেও বাংলাদেশের মানুষকে কিভাবে মুখ দেখাবেন জানিনা। এই নেত্রী নিয়ে আপনারা গর্ব করেছিলেন। এই নেত্রী নিয়ে অহংকার করেছিলেন। এই নেত্রীর সাথে সুর মিলিয়ে আপনারা বলেছিলেন শেখ হাসিনা পালায় না। একটা বার তো শেখ হাসিনা চিন্তা করেন নাই। এই ৭০ বছরের ঐতিহ্য তার বাবার সংগঠন, আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা কর্মীর কি হবে। একটা বাড়ও ভাবে নাই। কারন শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশ নয় আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিয়েছেন। সে বলেছিল ৭৫ সালে যখন আমার বাবাকে হত্যা করেছিল, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা তোমরা কোথায় ছিলে। শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের পিছনে বাঁশ দেয় নাই আপনাদের পিছনেও বাঁশ দিয়ে গেছে। কাজেই আওয়ামী লীগের লোকজনকে বলবো যদি ভাল মানুষ থেকে থাকেন। যদি সুষ্ঠু চিন্তার রাজনীতি বা বুদ্ধি বিবেক থাকে, তাহলে আপনারা সর্বপ্রথম শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচার করার ব্যবস্থা করেন। তারপরে আওয়ামী লীগের নাম ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করেন। নতুন নাম নিয়ে রাজনীতিতে আসেন। এর আগে একটা গণ তওবা করে ফেলেন। আপনারা এরকম শেখ হাসিনার মতন প্রতিশোধ পরায়ণ বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, বছরের পর বছর ধরে মানুষের কাধের উপর বসিয়ে শাসনব্যবস্থা করেছেন। শুধু এই কারণে আওয়ামী লীগের সমস্ত নেতাকর্মীদের বিচার হওয়ার দরকার।
জেলা খেলাফতে মজলিসের সভাপতি গোলাম মোর্শেদ তুহিন এর সভাপতিত্বে, সাধারন সম্পাদক হাফেজ মাওলানা মো:ওমর ফারুক, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পঞ্চগড় জেলা শাখার আমির মাওলানা ইকবাল হোসেন প্রমূখসহ বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।