স্টাফ রিপোর্টার : ইকবাল বাহার
পঞ্চগড়ে ইউপি চেয়ারম্যানের পরকীয়া কাণ্ড প্রকাশের জেরে সাইদুজ্জামান রেজা নামে এক সাংবাদিকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা ও পর্ণোগ্রাফী নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
গত ১৩ জুন রংপুর সাইবার ট্রাইবুন্যালে মামলাটি করেন দেবীগঞ্জ উপজেলার পামুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিভূষন রায়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দেবীগঞ্জ থানার ওসিকে আগামী ৬ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় ওই ইউপি চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন, তার ছবির সঙ্গে একই ইউনিয়নের সাবেক এক মহিলা সদস্যের ছবি এডিট করে পাশাপাশি বসিয়ে অসম্মানজনক ও যৌন উদ্দীপক পর্নোগ্রাফী উৎপাদন করে ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল করে সংবাদকর্মী সাইদুজ্জামান রেজাসহ আসামীরা। এতে তাদের সুনামক্ষুন্ন হয়েছে এবং স্বামীর সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝির কারণে সাবেক ওই মহিলা সদস্যের বিচ্ছেদও ঘটেছে।
সাংবাদিক সাইদুজ্জামান রেজা দৈনিক সকালের সময় ও নাগরিক টেলিভিশনের পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন।
মামলা সম্পর্কে এই সাংবাদিক বলেন, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সংবাদ প্রচার করেছি। জেলার অনেক সাংবাদিকই সে সময় এই বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। সকলকে বাদ দিয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমার নাম মামলায় দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করতে চেয়ারম্যানের এই হীন চেষ্টা।
এদিকে, সাংবাদিকের নামে মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পঞ্চগড় জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীরা।
জানা গেছে, পামুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিভূষন রায় ও তার পরিষদের সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য মোছা. রাশেদা বেগম বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। পরিস্থিতি বেগতিক অবস্থায় যাওয়ায় প্রতিকার চেয়ে দেবীগঞ্জ থানায় ও পরে আদালয়ে অভিযোগ করেন রাশেদা বেগমের স্বামী আবু সাঈদ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩১ মে ‘ইউপি চেয়ারম্যান-সাবেক ইউপি সদস্যের পরকীয়া, থানায় অভিযোগ’ শিরোনামে দৈনিক সকালের সময়, কালবেলা, ইনকিলাবসহ বেশ কিছু প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
সংবাদে উল্লেখ ছিলো, রাশেদা বেগমের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। তার স্বামী চার বছর আগে বিদেশে যান এবং নিজের উপার্জিত অর্থ স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে পাঠান। এরই মধ্যে রাশেদা বেগম পামুলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনিভূষন রায়ের সাথে পরকিয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এদিকে বিদেশে থেকে দেশে ফেরেন আবু সাঈদ। এরপর স্ত্রীর কাছে পাঠানো টাকার হিসাব চাইলে সে বিভিন্ন টালবাহানা করে। পরে রাশেদা কিছু টাকা চেয়ারম্যানকে দেওয়ার কথা স্বীকার করে। সেই সঙ্গে অনুতপ্ত হয়ে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চায়। তাকে ক্ষমা করে দেওয়ার পরেও পরকীয়া সম্পর্ক চলমান রাখার অভিযোগ ওঠে। চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে বাধা দিলে তিনি বিভিন্নভাবে হুমকি দেন।
অনেকেই সংবাদ করেছে, মাত্র একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করলেন কেন? জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মনিভূষন মুঠোফোনে বলেন, সাইদুজ্জামান রেজা আমাকে সর্ব প্রথম পঁচিয়েছে। আমার সম্মানহানি করেছে।